বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বাংলাদেশের একটি ছাত্র সংগঠন, যা ২০২৪ সালের ২৩শে অক্টোবর বাংলাদেশ সরকারের অন্তর্বর্তী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দ্বারা সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
এ সংগঠনটি বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন হিসেবে স্বীকৃত ছিল এবং ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়। সংগঠনটি ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন জাতীয় আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
তবে, স্বাধীনতার পর বিশেষত ১৯৯০-এর দশক থেকে ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। অভিযোগ করা হয়, আওয়ামী লীগ এই সংগঠনকে অঘোষিত “লাঠিয়াল” বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে। হত্যা, নির্যাতন, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, যৌন নিপীড়নসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে ছাত্রলীগের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়।
২০০৯ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ছাত্রলীগের সহিংসতায় ৩৩ জন নিহত এবং ১,৫০০ জন গুরুতর আহত হয়। ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে এই সংখ্যা বেড়ে ১২৯ জনে পৌঁছায়, এবং ২০১৮ সালেই ৩১ জন নিহত হয়। এসব সহিংসতায় ছাত্রলীগের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আরও তীব্র হয়, এবং বিভিন্ন সময়ে সংগঠনটির বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
২০১৬ সালে গুলশান হামলার পর জঙ্গি সংগঠন জামাত-উল-মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সঙ্গে এক ছাত্রলীগ নেতার সম্পৃক্ততার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া, ২০২১ সালে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ছাত্রলীগের কর্মীদের জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রীদের নিয়ে জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তি চক্র পরিচালনার অভিযোগও ছাত্রলীগের নেতাদের বিরুদ্ধে আনা হয়েছিল।
২০২৪ সালের নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে ছাত্রলীগের ওপর সরকারের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়, যা এই সংগঠনটির দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক এবং সামাজিক কার্যক্রমকে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসে।
https://slotbet.online/